নবম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর 15/-7/2024
Class IX Islamic Education Exam Questions and Answers 15/07/2024
১ম অধ্যায় আকাইদ
একক কাজ
১. তোমার বাস্তব জীবনে আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহ চর্চা বা অনুশীলনের জন্য এক মাস মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করে তা সফল বাস্তবায়ন শেষে নির্ধারিত ছকে প্রতিবেদন তৈরি করো।
- উত্তর: আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহ চর্চা করার জন্য প্রতিদিন একটি নাম নিয়ে তার অর্থ ও ব্যাখ্যা শেখা এবং সেই নাম অনুযায়ী জীবনে তা প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, আল্লাহর নাম ‘আল-রাহমান’ অর্থাৎ সর্বময় দয়ালু। এই নামের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনে দয়া ও ক্ষমা প্রদর্শনের অনুশীলন করা হবে। প্রতিদিন নাম চর্চার পর ব্যক্তিগত ডায়েরিতে এর প্রতিফলন লিখে রাখা হবে।
২. যেসব বিশ্বাস ও কাজের মাধ্যমে আমরা তাওহিদ মজবুত করব তার তালিকা তৈরি করো।
- উত্তর:
- শুধুমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা
- সকল ধরনের শিরক ও কুফর থেকে দূরে থাকা
- নিয়মিত সালাত আদায় করা
- আল্লাহর আদেশ মেনে চলা ও নিষেধ মানা
- রোজা রাখা এবং যাকাত প্রদান করা
- কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামের শিক্ষা অনুসরণ করা
নবম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর 15 /07/2024
৩. জান্নাত লাভের জন্য এখন থেকে যেসব কাজ তুমি অভ্যাসে পরিণত করবে, ইসলামি আকিদার আলোকে দৈনন্দিন চর্চার ক্ষেত্রগুলোর একটি তালিকা তৈরি করো।
- উত্তর:
- নিয়মিত সালাত আদায় করা
- রোজা রাখা
- যাকাত প্রদান করা
- সৎকর্ম করা এবং পাপ থেকে বিরত থাকা
- সত্য কথা বলা ও মিথ্যা পরিহার করা
- কুরআন তিলাওয়াত করা
- অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং দানশীলতা পালন করা
৪. আল্লাহ তা’লার নির্দেশনা মেনে চলি, কুফর থেকে নিজেকে দূরে রাখি।’ উল্লিখিত শিরোনামের আলোকে কুফর থেকে নিজেকে দূরে রাখার কৌশল বর্ণনা করে ২০০ শব্দের একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।
- উত্তর: আল্লাহ তা’লার নির্দেশনা মেনে চলা এবং কুফর থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য প্রথমেই আমাদের তাওহিদে দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হবে এবং প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে। কুরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করে ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া আমাদের মনের মধ্যে আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা রাখতে হবে যাতে আমরা পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারি। নিয়মিত দান ও সৎকাজের মাধ্যমে আমাদের ইমানকে মজবুত করতে হবে এবং সব ধরনের শিরক ও কুফর থেকে দূরে থাকতে হবে। সামাজিক জীবনে আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইসলামের শিক্ষা বিস্তার করতে হবে।
৫. নিফাক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য ব্যক্তি, পরিবার, বিদ্যালয় ও সমাজ জীবনে আমি যেসব ভাল কাজ করবো এবং যেসব মন্দ কাজ পরিহার করবো তার তালিকা তৈরি করো।
- উত্তর:
- ভালো কাজ:
- সত্যবাদীতা ও ন্যায়নিষ্ঠতা পালন করা
- সালাত, রোজা ও যাকাত যথাযথভাবে পালন করা
- পরিবারের সদস্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
- বিদ্যালয়ে অধ্যয়নে মনোযোগী থাকা
- সমাজে সৎ কাজ করা এবং অন্যকে সৎ কাজের জন্য উৎসাহিত করা
- মন্দ কাজ পরিহার:
- মিথ্যা বলা
- পেছনে কথা বলা বা গীবত করা
- প্রতারণা ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া
- হিংসা-বিদ্বেষ করা
- আল্লাহর আদেশ অমান্য করা
- ভালো কাজ:
জোড়ায় কাজ
১. মহান আল্লাহর পরিচয় তথা আসমাউল হুসনায় আল্লাহর কি কি গুণাবলি প্রকাশ পায় তা তোমার বন্ধুর সাথে আলোচনা করে চিহ্নিত করো।
- উত্তর: মহান আল্লাহর আসমাউল হুসনায় বিভিন্ন গুণাবলি প্রকাশ পায়। যেমন, আল্লাহ্ হচ্ছেন আল-রহমান (পরম দয়ালু), আল-রহিম (অত্যন্ত করুণাময়), আল-মালিক (সার্বভৌম অধিপতি), আল-কুদ্দুস (পরম পবিত্র), আস-সালাম (শান্তির উৎস), আল-মুমিন (বিশ্বাসের রক্ষাকর্তা), আল-মুহাইমিন (রক্ষাকারী), আল-আজিজ (পরাক্রমশালী), আল-জব্বার (অত্যন্ত ক্ষমতাশালী) এবং আরও অনেক গুণাবলি।
২. তাওহিদে বিশ্বাসের ফলে ব্যক্তির জীবন ও কর্মে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে (পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত বিষয়গুলো ব্যতীত) জোড়ায় বা দলে আলোচনা করে তুমি/তোমরা একটি তালিকা প্রস্তুত করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর:
- ব্যক্তির মধ্যে আল্লাহর প্রতি গভীর বিশ্বাস স্থাপন হয়
- মন ও মানসিকতা শুদ্ধ হয়
- নৈতিকতা ও আচরণের উন্নতি হয়
- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা
- সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা
- অন্যের প্রতি সদয় আচরণ করা
- আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়
- Class IX Islamic Education Exam Questions and Answers 15/07/2024
৩. আমাদের যেসব কথা ও কাজ কুফরির পর্যায়ে পড়ে তার একটি তালিকা প্রস্তুত করো।
- উত্তর:
- আল্লাহকে অস্বীকার করা
- শিরক করা বা আল্লাহর সাথে অন্যকে শরিক করা
- কুরআন বা নবী মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি অবিশ্বাস প্রকাশ করা
- ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা
- ইসলামের শিক্ষার বিপরীতে কাজ করা
- ইবাদাত পরিত্যাগ করা
৪. যেসব কথা ও কাজ কুফরের পর্যায়ভুক্ত তা জোড়ায় আলোচনা করে শ্রেণি শিক্ষকের নির্দেশনা মোতাবেক উপস্থাপন করো।
- উত্তর:
- আল্লাহ বা নবী (সা.) এর বিরুদ্ধে কটূক্তি করা
- ইসলামের বুনিয়াদি বিশ্বাসকে অস্বীকার করা
- পবিত্র কুরআনকে অসম্মান করা
- ইবাদাতের প্রতি অনীহা প্রদর্শন করা
- শিরক করা বা মুশরিকদের সাথে সহযোগিতা করা
১. পর্যবেক্ষণ বা মতবিনিময়ের মাধ্যমে আকাইদ সংক্রান্ত যে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছ, তা খাতায় বা পোস্টারে উপস্থাপন করো।
- উত্তর: আকাইদ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর একত্ববাদ, নবীদের প্রতি বিশ্বাস, কুরআন এবং হাদিসের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারি। আকাইদ আমাদের জীবনের নৈতিক দিকগুলোকে শক্তিশালী করে এবং ইসলামের মূল শিক্ষা বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
২. পরকালে জান্নাত লাভের জন্য আল্লাহর ইবাদাতের সাথে আমাদের নৈতিক চরিত্রের যেসব দিক উন্নয়ন করা অত্যাবশ্যক তা দলে আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর:
- সত্যবাদীতা ও ন্যায়নিষ্ঠতা পালন করা
- সহনশীলতা ও ক্ষমাশীলতা
- অন্যের প্রতি সদয় হওয়া
- নিয়মিত ইবাদাত করা
- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা
৩. আখিরাত দিবসে কল্যাণ লাভের জন্য আমরা যেসব কাজ নিয়মিত চর্চা করবো” দলে আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর:
- নিয়মিত সালাত আদায় করা
- রোজা রাখা
- যাকাত প্রদান করা
- দান করা এবং সৎ কাজ করা
- আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা
৪. মুনাফিক আমাদের সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করে’—উল্লিখিত শিরোনামের আলোকে তোমরা প্যানেল বা দলে আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর: মুনাফিকরা সত্যকে আড়াল করে এবং সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে। তারা মিথ্যা বলে, প্রতারণা করে এবং সৎকাজে বাধা দেয়। তাদের কারণে সমাজে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
নবম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর 15 /07/2024
নবম শ্রেণির ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন-২০২৪
২য় অধ্যায়: ইবাদাত
একক কাজ
১. একজন ইমামকে যেসব কারণে তুমি সম্মান করবে এ বিষয়ে ২০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।
- উত্তর: একজন ইমামকে সম্মান করার প্রধান কারণ হল তিনি আমাদের ধর্মীয় নেতা এবং আমাদের সালাতের ইমামতি করেন। তিনি আমাদের ইসলামের শিক্ষা দেন এবং সঠিক পথে চলার নির্দেশনা প্রদান করেন। ইমাম ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং আমাদের সমাজের নৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং আমাদের নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হন। ইমামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা ইসলামের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারি।
২. ফিদিয়ার প্রযোজ্য ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করো।
- উত্তর:
- অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে না পারলে
- অতিরিক্ত বয়সের কারণে রোজা রাখতে না পারলে
- হজ বা উমরার সময় কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে
- কোনো কসম ভঙ্গ করলে
৩. তোমার বাস্তব জীবনে হজ, কুরবানির শিক্ষার প্রয়োগ বা অনুশীলনের ক্ষেত্রসমূহ আলোচনা করো।
- উত্তর:
- আল্লাহর প্রতি ত্যাগ ও নৈকট্য অর্জন করা
- অন্যের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য প্রদর্শন করা
- দানশীলতা ও উদারতা পালন করা
- আত্মশুদ্ধি ও পরিশুদ্ধতা অর্জন করা
- কুরবানির মাংস বিতরণের মাধ্যমে সমাজে সমতা ও ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করা
দলগত কাজ
১. “নিয়মিত সালাত আদায়ের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচরণে যেসব পরিবর্তন করব তা দলে আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর:
- নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তিতা বৃদ্ধি পায়
- শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা উন্নয়ন হয়
- ধৈর্য্য ও সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়
- আল্লাহর সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়
- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা
২. ইবাদাত হিসেবে সালাত ও সাওমের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।
- উত্তর:
- সালাত: দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করা হয়, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা, মনের প্রশান্তি ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধি করা।
- সাওম: বছরে এক মাস পালন করা হয় (রমজান), আত্মসংযম ও ধৈর্য্য বৃদ্ধি করা, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা, গরীব-দুঃখীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা।
৩. ‘সঠিক নিয়মে যাকাত প্রদান করলে আমাদের সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা হবে’—আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর: যাকাত সমাজে সম্পদ পুনর্বণ্টন করে এবং দরিদ্রদের সাহায্য করে। এটি সামাজিক বৈষম্য কমায় এবং সমাজে অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা করে। যাকাত প্রদান করে ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
৪. ফসল, গবাদি পশু ও ব্যবসায়িক সম্পদের যাকাত সঠিক নিয়মে প্রদান করলে আল্লাহ তা’লা সম্পদ বৃদ্ধি করেন’—দলে আলোচনা করে উপস্থাপন করো।
- উত্তর: ফসল, গবাদি পশু এবং ব্যবসায়িক সম্পদের যাকাত প্রদান করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। যাকাত সম্পদের পরিশুদ্ধতা আনে এবং আমাদের সম্পদে বরকত আসে। আল্লাহ তা’লা আমাদের দানশীলতা দেখে আমাদের সম্পদ বৃদ্ধি করেন।
৫. আমাদের সমাজে দারিদ্র্য-দূরীকরণে যাকাতের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
- উত্তর: যাকাত দরিদ্রদের সাহায্য করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করে। এটি সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন করে এবং দারিদ্র্য হ্রাস করে। যাকাত সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য সৃষ্টি করে এবং দরিদ্রদের উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করে।
৬. সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় হজের ধর্মীয় ও সামাজিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
- উত্তর: হজ মুসলমানদের মধ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার এক অনন্য উদাহরণ। হজ পালনকালে সকল মুসলমান একত্রে আল্লাহর ইবাদাত করেন এবং তাদের মধ্যে কোনো ধরনের বৈষম্য থাকে না। হজ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি করে এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভালোবাসা সৃষ্টি করে।